Tuesday 3 April 2018

প্রতিবাদ ১



প্রতিবাদ ১


মিষ্টিভাষি


টিভি তে দেখে শিখেছিলামশিশুশ্রমিক রাখা একটা অপরাধ। সেই কারনে কোন এক মফস্বল এলাকায় একটা শিশুকে চা দোকানে কাজ করতে দেখে দোকানদারকে অপরাধী বলে মনে হয়েছিল।  ছেলেটার নাম ধরেনিননা রামশ্যামরহিম বা অন্য কিছু। বয়স মাত্র দশ বছর। চা দোকানের এঁটো গ্লাস ধুচ্ছেখরিদ্দারদের চা দিচ্ছে। মনে হল এই বয়সের ছেলেরা পড়াশোনা করেমা-বাবার সাথে আনন্দ করে। কথাটা মনে হতেই নিজের মধ্যে একটা প্রতিবাদ করার প্রবল ইচ্ছা জেগে উঠল। প্রতিবাদ করলাম ও। আমার দেখা দেখি আরও কিছু আমার মতো খরিদ্দারও  তাই করল। আমাদের প্রতিবাদ দেখে বাচ্চা ছেলেটা দৌড়ে দোকানদারের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। তার চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। দোকানদারকে দেখলাম নিরুত্তাপ। বাচ্চাটাকে বলতে শুনলাম, "ভয় পাসনাআমি তো আছি"। আমার মাথা আরো গরম হয়ে গেল। এতটাই গরম যে আর একটু হলে দোকানদার কে মেরেই দিতাম। দোকানদার  হাঁসি মুখে আমায় বলল," একটা কাজ করুন। আপনাকে ওর বাড়ির ঠিকানা দিচ্ছিগিয়ে দেখে আসুন। তারপরও যদি আপনার মনে হয় আমি ভুল করছিতাহলে তো আমি আর আমার দোকান রইলইযা ইচ্ছে হয় করবেন।" ঠিকানাটা যখন আমার হাতে দিলদেখলাম সেটার সত্যতা যাচাই করার জন্য আমার পাশে আর কেউ নেই। সবাই পালিয়েছে যে যার কাজে। কিছুমুহুর্ত প্রতিবাদ পরিণত হয়েছে পলায়নে। কিন্তু আমি ঠিক করে নিলাম এর শেষ দেখেই ছাড়বো।
    দোকানের পাশেই রাস্থায় দাঁড়ান একটা রিক্সাকে ঠিকানাটা  বলে উঠে পড়লাম। কিছুক্ষণ পর পৌঁছিয়ে গেলাম নির্দিষ্ট ঠিকানায়। দোকানদারের বলে দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী একটু এগিয়ে যেতেই পেয়ে গেলাম বাচ্চাটার বাড়ি। বাড়ি বলাটাকি ঠিক হবেবাঁশের খুঁটির উপরে দাঁড়িয়ে টালির বাড়ি। টালির ভেঙ্গে যাওয়া অংশ থেকে জল ও রোদ আটকানর জন্য লাগানো হয়েছে বড় বিজ্ঞাপনের ব্যানার। ভিতরে ঢুকতে আর ইচ্ছে করল না। আসে পাশের কিছু লোকজনের থেকে বাচ্চাটার কিছু তথ্য সংগ্রহ করলাম। যে তথ্য আজও আমার জীবনে একটা করুন সংগ্রহ হয়ে রইল। তথ্যটা এই রকম-  বাচ্চাটার বাবা ছিলেন রঙের মিস্ত্রি। কোলকাতায় এক ঠিকাদারের কাছে কাজ করতেন। বাচ্চাটার বয়স যখন আড়াই বছরসেই সময় একদিন কলকাতা থেকে খবর আসে বাচ্চাটার বাবা কোন এক বাড়িতে রঙ করার সময় ভারা ভেঙ্গে পড়ে গিয়ে মারা জান। এই ঘটনার মাস তিন পর বাচ্চাটার মাও কোন এক ব্যাক্তির হাত ধরে বাচ্চাটাকে তার ঠাকুরমার কাছে রেখে চলে যায় নতুন সংসার পাততে। আর ফিরে আসেনি। এখন এই বাড়িতে বাচ্চা ও তার বয়স্কা ঠাকুরমা আছেন। সেই বয়স্কাও বয়সের দরুন চোখে দেখতে পায় না। ঐ বাড়িতে একমাত্র উপার্জন করার মত ব্যাক্তি ঐ বাচ্চাটা। 
চায়ের দোকানটায় আর ফেরা হল না। সারাটা সময় বাচ্চাটার কথাই মাথায় ঘুরছিল। বাড়ি ফেরার পথে সঙ্গি রইল কেবল চোখের কোণে কয়েক ফোঁটা নোনাজল। এর পরেও কি প্রতিবাদ করা সম্ভব?


(ক্রমশ)    


স্বপ্নদেশ

স্বপ্নদেশ

অর্পণ ব্যনার্জি



কান্নাকাটি সাঙ্গ করে এবার হাসির পালা,

সবপ্নদেশ রয়েছে দূরে নিয়ে খুশির ডালা।
আকাশ সেথা মুক্ত রঙ্গিন আর আছে রামধনু,
শান্ত পাখির কলরবে উজ্জ্বল মোর তনু।
গাছে গাছে আলাপ সেথায় পশুপাখি মুক্ত,
সবের সাথেই কেমন যেন আমোদখানি যুক্ত।
সাতটি রঙের বিকাশ লাগে এই মন প্রাণে,
আত্মা মোর আবাক আজি মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণে।
ঝড় ঝঞ্ঝা নেই কো কোন কেবল নীলাম্বর,
এখনে এলে মরমে পোষে অন্য রকম ধর।
বাঘের সনে হরিণ হাঁটে সিংহ নির্বিকার,
খুশির হাসি পাখা মেলে নেইকো মুখ ভার।
মানুষে মানুষে বড়ই মিল অবাস্তব এ দেশে,
তেলের সাথে জল এখন পুরো ভাবে মেশে।
রাজ্য্নীতির কথাই নেই যে যার মত রাজা,
স্বপ্ন পথে হাঁটতে হাঁটতে হল মন তাজা।
হেথায় নারী বেজায় সফল নিজের পায়ে দাঁড়ায়,
সমাজ নামক কীটকে এখন কভু না ডরায়।
আজকে শিশু হল গিয়ে কালকের আশা ভরসা,
মেঘের দ্বারা ভূ ঢাকলেও আকাশ যেন ফরসা।
ছায়ার তলে দাঁড়িয়ে মোরা শীতল পরিবেশ,
হেথায় সবাই খোলামেলা কাটে জীবন মেশ।
সহজ জীবন ইশারাতে দিলাম আমি পাড়ি,
মিলে মিশে সবাই এক পুরুষ এবং নারী।
অর্থবিহীন এই রাজ্যে মানেটাই হল আসল,
বৃষ্টি বিনাই কেমন ফলে অবাক করা ফসল।
দুঃখ কষ্ট ভুলে সবাই এই দেশেতে চলো,
মনের কথা চিৎকার করে ফের একবার বলো।
দমবন্ধ পরিস্থিতি থেকে ছুটকারা,
সবপ্নদেশের পরে আসে শান্তি বারি ধারা।
চমকের পর চমক লাগে স্বপ্ন বাসস্থানে,
স্বপ্ন রাজ্য পরিপূর্ণ প্রকৃতিরই দানে।
পাখা মেলার এই অবকাশ না ফেলাই উচিৎ,
মুঠো মুঠো খুশির ফলে শক্ত জীবন ভিত।
হাঁসির ফোয়ারাতে মানুষ সেথায় বাঁধনহারা,
সেই স্বপ্ন রাজ্য জুড়ে এবার ফেলুক সাড়া।
মনের চোখ বন্ধ হলেই সামনে অন্য জীবন,
রঙের জালে মেলার মায়ায় রংবাহারী ভুবন।
তাই বলি সব চলো মোর সাথে সেই দেশে
আকাশ ও ভূমিতলের রেখা যেথায় মেশে।

Tuesday 27 March 2018

স্বাধীনতা

স্বাধীনতা

অস্মিতা



দুধে আলতায় পা দিয়ে যেদিন এ বাড়িতে পা রেখেছিল অসিমা, সেদিন ই মনে মনে জানত এ বিয়ে তার কাছে নাম মাত্র। Typical মধ্যবিত্ত সংসারে সে কোনদিনই মানিয়ে নিতে পারবে না। এমন ও তো নয়, যে বাবা মায়ের কাছে গিয়ে বলবে সমস্যার কথাগুলো। ভালবেসে বিয়ে বলে কথা। তারা কোনদিনও নিজেদের  মেয়ের যোগ্য পাত্র বলে মনে করেননি, আজও করবে না।
বিয়ের প্রথম এক বছর কেটে গেছিল সপ্নের মতন।প্রতিদিনই কারোর না কারোর বাড়ি যাওয়া। আত্মীয় সজনদের সাথে আলাপ পরিচয়। কমলেশের বাবা মা ও বেশ গর্ব প্রকাশ করেছিল ছেলের বউকে নিয়ে। 

বাগ বাজারের এক ধনি পরিবারের মেয়ে অসিমা। জীবনের বাইশটা বছর সে নিজের খেয়ালখুশিতে কাটিয়েছে। কলেজেই প্রেম ওদের দুজনের। সেখান থেকে বাড়িতে জানাজানি, তারপর বিয়ে। বিয়ের পর নিজের পি এইচ ডি টা করবে বলে মনস্থির করেছিল ভালবাসার হাওয়ায় ভেসে চলা মেয়েটা। সে স্বপ্ন কবেই দুচোখ বন্ধ করে স্থান নিয়েছে মনের এক ধুল পড়া কোনে।

এক সরকারি অফিসের ক্লার্ক এর চাকরি কমলেশের। বাড়ির বউ চাকরি করলে মধ্যবিত্তের ম্যান রক্ষা হয়না নাকি। তাই কমলেশের চাকরির টাকাতে সংসার চলে চারজনের। মায়ের প্রবল ইচ্ছে এই চারজনকে পাঁচজন করার। অসিমা  জানে এই চাকরিতে কোনদিনও তা সম্ভব নয়। নিজের সমস্ত আশা বিসর্জন দিয়ে সে শুধু ঘরের মধ্যে বসে থাকে চুপচাপ। এক কালের দস্যি মেয়ে আজ বড় শান্ত, পরিস্তিতি করে তুলেছে অজ্ঞানুবর্তি। কমলেশের মা যেদিন প্রথম তাকে দেখেছিল, সেদিন রাতেই তার ছেলেকে বলে, "বাঙালি ঘরের বউ এত ছোট চুল হলে কি করে হবে? ওকে বলেদিস কোমর অবধি চুল হলে তবে বিয়ের পিড়িতে বসতে।" নিজের মায়ের কথামত অসিমাকে তাই করতে বলে সে। এও বলে দেয় যে, বিয়ের পর চাকরি করা চলবে না। পড়াশোনা হলে হতে পারে, চাকুরি নয়। যে বাড়িতে রাতদিন  দুমুঠো খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়, সে বাড়িতে নাকি পি এইচ ডি।

হাঁসিও পায় তার, নিজের বোকামানুষীর কথা ভেবে। ভালবাসায় সব ছেড়েছে সে।  Dress, Jeans, Top ছেড়ে শাড়িতে পিঠ ঢাকা দেওয়া থেকে শুরু করে জল গড়িয়ে না খাওয়া মেয়ে আজ রান্না করে পরিবারের জন্য। ভালবাসার কোন অভাব নেই এই বাড়িতে। তবুও কিছু কিছু জিনিস যেন ধু ধু মরীচিকার মত। হয়তো অভাব শুধু সময়ের।কমলেশ বেরিয়ে যায় সকাল ন'টায়। তার মধ্যে সব রান্না বান্না সেরে খেতে দিতে হয় তাকে। তারপর শুরু হয় জলখাবার করে দেওয়া। এইসব  করতেই আড়াইটে বেজে যায়। Diet Conscious মেয়ে আজ বেলা তিনটেয় ভাত খায়। দিনের ঐ দুপুর টুকুই শে শুধু পায় নিজের জন্য একটু। প্রিয় গল্পের বইএর পাতায় হাত বুলায়, চোখ বন্ধ করে তার গন্ধ অনুভব করে সে- যেন শান্তি খুঁজে পায় মেয়েটা।

মনে পড়েযায় ছোটবেলার বাবার সেই কথাগুল, "মেয়েদের জীবনে অনেক কিছু ছাড়তে হয়। দুএকটা ছোটখাটো স্বাধীনতা বিসর্জন দিলে মানুষ মরে যায় না।" ছোট বেলায় সে বুঝত না এখন বঝে না- স্বাধীনতার আবার ছোট বড় কি? 

Saturday 3 March 2018

রাতে জেগে আমার শহরের গল্প হোক (কবি ও তাঁর কল্পনার কথোপকথন)


রাতে জেগে আমার শহরের গল্প হোক।

(কবি ও তাঁর কল্পনার কথোপকথন) 



ওভি তন্ময় দাস






কবি         : কোন দিন ঘুমানো শহর কে দেখেছিস??..

কল্পনা    : না,  কেনো?

কবি         : রাতের ঘুমোনো শহর কে বেস শান্ত লাগে, জানিস? খুব নিশ্চিন্ত লাগে, মনে হয় যেন, গোটা শহর কে ঘুম  পারিএছে।... কি শান্ত, কি নিশ্চিন্ত, মনে হয় কত ক্লান্তি ধরা দিয়েছে তার শরীরে।

কল্পনা    : তুমি জানলে কি করে???  তুমি বুঝি দেখেছো??...

কবি         : হুম, তবে, আমি পুরো শহর কে দেখেনি যেটুকু দেখেছিলাম তাতে এই অনুভুতি হয়েছিল।..

কল্পনা    : আচ্ছা! রাস্তাও কি ঘুমায়?

কবি         : তা, বলতে পারব না। তবে আমার মনে হয় সে সেই সময় একটু জিরয়।.

কল্পনা    : আচ্ছা, তাদের ও কি, কেউ ডাকলে ঘুম ভাঙেঁ??...

কবি        : না!!! একটা চিল চিৎকার, একটা আয়ম্বুলনেস এর বাঁশির আওয়াজ ও গোটা শহরের ঘুম ভাংয়ায়                   না।.

কল্পনা    : তবে সে ও কি নিস্টুর?

কবি         : ধোর বোকা,!! কেন, শুনিসনি, সুয়োরানী র দুয়োরাণী গল্পে? সেই গল্পে এক অপরূপ সুন্দরি রাজকুমারী কে, দুয়োরাণী র  মা জলেএর তলায় এক রাহ্মসির দেশে সোনার কাঠি, রূপোর কাঠি দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখতো! তেমোন ভাবেই এই শহর ও রাতে ঘুমোয়। সহজে জাগে না, জতহ্মন না, দিনের আল পড়ে শহ্রের বুকে!...

কল্পনা   : এখানে দুয়োরানী কে??

কবি       : জানি না!

কল্পনা   : তবে? কে তাদের কোন মন্ত্রে আটকে রাখে রাতের বেলায়???.

কবি        : আমি সত্যি জানি না!
                হয়ত, হয়তবা!!!
                সেও এক মানুষ!!!

Friday 2 March 2018

মুহুর্ত (কবিতা)

মুহুর্ত

অনীশ পাইন



জীবন বড়ই ক্ষরস্রোতা,
সময় তারই সঙ্গী;
মানবতার সৌন্দর্য,
তারই এক ভঙ্গী।।
জীবনের এই ক্ষরস্রোতে, মুহুর্ত যেন কনা,
তারই মাঝে আছে যে সব স্মৃতি অজানা।
মুহুর্তে শুরু, মুহুর্তে শেষ,
মুহুর্ত থামায় জীবনের রেশ।
মুহুর্তের কাছে সবাই ঋনী,
মুহুর্তে তিলোত্তমা কল্লোলিনী।
মুহুর্তে টিকে মানবতা, সকল দুঃখ নিবারণ
মুহুর্তেই তাই সর্বসুখ, সকল দুঃখ বিসর্জন।।

Tuesday 27 February 2018

সৈনিক (কবিতা)


সৈনিক

মেঘনা মজুমদার



সে ছিল শক্তির প্রতীক, সে থাকত বহু দূরে,
ঘর পরিবার বিসর্জন দিয়ে, কোন এক রুক্ষ প্রান্তর জুড়ে।
তার এক কাঁধে বন্দুক, অন্যটিতে দায়িত্ব
সে যে পথ নিয়েছিল অনেক বড়, ভুলে নিজের অস্তিত্ব।।

তার উপয়া ছিল না কাঁদার, সময় ছিল না বিলাসিতার,
বিনোদন ছিল শুধুই অনুশীলন,
তবুও যেদিন আকাশে হটাৎ মেঘ করত বা ঝলমলে রোদ উঠত
কোন এক অলস দুপুরে, গভির রাত্রে তার হটাৎ খুব মন কেমন করত,
কিন্তু তার যে দুঃখ করাও মানা, কবেই সে কেটে ফেলেছে
সেই সময় সুখ স্বপ্নের ডানা।

সে যে দেশের রক্ষক, তার জীবনের নেই কোন নিশ্চয়তা,
আকাশের পানে উদাস নয়নে সে কেবল ভাবে
এই ভাবেই হটাৎ কোনদিন সে মিলিয়ে যাবে আকাশে।
বড় একা, বড়ই একা, অথচ সেই নাকি শক্তির প্রতীক,
তাদের সকলকে জানাই প্রাপ্ত সম্মান,
দুঃসাহসী, বেপরয়া সে আহত সৈনিক।

পবিত্র আত্মা (ছোট গল্প)


পবিত্র আত্মা

বিট্টু বৈদ্য


আজ ক্লাবে আড্ডা মারতে একটু বেশী দেরি হয়ে গেলদৌড়ালাম বাড়ির দিকে। সন্ধ্যে পার হয়ে গেছে। সবাই বারন করল, তবুও তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য ওই রাস্থাটাই বেছে নিলাম। রাস্তাটার একটা বদনাম ছিল। দুটো উঁচু পাঁচিলের মাঝে এই রাস্তাটা। একটা পাঁচিল চার্চ কে ঘিরে রেখেছে আর অন্যটা একটা কবরস্তানকে। রাস্তাটায় কিছুটা গেছি পেছন থেকে একটা ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। একজন পাদ্রি আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার প্রশ্ন করলেন, “ এই আন্ধকারে তুমি এই রাস্তায় এলে কেন?”
“ কেন? এই রাস্থায় কি আছে যে যাব না?”
“ সব জেনেও আমায় জিজ্জাসা করছ।”
“ আমি ভূত বিশ্বাস করিনা। আর আপনি এলেন কি ভাবে? ভয় করল না?”
অন্ধকারে দুজন রাস্তাদিয়ে হাঁটতে আরাম্ভ করলাম। পাদ্রি সাদা পোশাক পরে আছেন। মাথায় একটা টুপি গলায় একটা মালা। হাতে একটা বই। মনে হল বাইবেল। ওনাকে পাশে পেয়ে সাহস একটু বাড়ল। পাদ্রি ভদ্রলোক বললেন, “ আমার সাথে আমার যীশু সবসময় থাকেন। তাই ভয় পাই না”। একটু চুপ করে থেকে আবার বললেন, “ তুমি ঈশ্বর বিশ্বাস কর”?
“ হ্যাঁ করি”।
“ কেন কর তাকেও তো দেখনি। যদি তুমি ঈশ্বর বিশ্বাস কর, তাহলে ভূতও তোমায় বিশ্বাস করতে হবে। চল তোমায় একটা জিনিস দেখাই”।
“ আজ দেখতে পারব না। বাড়িতে তাড়াতাড়ি না ঢুকলে বাবা মেরে ঠ্যাঙ খোঁড়া করে দেবে”
“ চিন্তা কর না। কেউ কিছু বলবে না। এটা সবসময় সঙ্গে রেখ। যীশু তোমায় সাহায্য করবে” এই বলে ওনার গলার মালাটা আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন। আমি হিন্দু তবুও মনের মধ্যে একটা ভক্তি ও বিশ্বাস জন্মাল। সেটা হাতে নিয়ে চললাম, ওনার পেছন পেছন। রাস্থাটা পার করে ডানদিকে রাস্তা ধরলে চার্চের দরজা আর আমাদের বাড়ির রাস্তা। কিন্তু আমরা ধরলাম বাম দিকেরটা। সেটা কুবরস্থানের ঢোকার রাস্থা। আমরা সেদিকে দিয়ে কবরস্থানে প্রবেশ করলাম। একটা নিদিষ্ট কবরে সামনে দাঁড়িয়ে আমায় বললেন, “ এখানে যাই দেখনা কেন একটুও ভয় পাবে না। পুরটাই আমার হাতের মধ্যে থাকবে। কোন বিপদ তোমার হবে না”। এবার কবররে দিকে মুখ করে বললেন, “ উঠে এসো পল। আমি এসেছি”। এর পর যে দৃশ্য আমি দেখলাম তাতে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলাম না। দেখলাম একটা কঙ্ককাল কবরে উপর এসে বসলো। তার  মাংসতো নেই এমনকি হাড়ও প্রায় খয়ে যেতে আরাম্ভ করেছে। আমি প্রায় ভয়ে অজ্ঞান হয়ে জাছিলা। আমার চোখ পড়ল পাদ্রির চোখে। দেখলাম উনি চোখ দিয়ে বুঝিয়ে দিলে “ তোর কোন ভয় নেই, আমি আছি”। ভয়টা কোথায় উড়ে গেল। তারপর শুনতে পেলাম সেই পাদ্রির বাইবেল পাঠ। কতক্ষন চলল বুজতে পারলাম না। একসময় দেখলাম কঙ্কালটা আসতে আসতে কবরের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। আমার চেতনা ফিরল। পাদ্রিকে বিষয়টা কি জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, “ তুমি যাকে কবরে দেখলে ওটা আমর শরীর আর আমি ওর আত্মা। ওকে সপ্তাহে একদিন করে এসে বাইবেল শুনিয়ে যাই। যতদিন ওর শরীরের সামান্য অংশ থাকবে আমায় আসতে হবে”। আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না। জ্ঞান হারালাম। যখন জ্ঞান ফিরল দেখলাম সূর্য আলো ফুটেছে আমি পড়ে আছি সেই কবরস্থানে মধ্যে। হাতে রয়েগেছে সেই মালাটা, যা এখন আমার গলায় থাকে।
    
     

প্রতিবাদ ১

প্রতিবাদ ১ মিষ্টিভাষি টিভি তে দেখে শিখেছিলাম ,  শিশুশ্রমিক রাখা একটা অপরাধ। সেই কারনে কোন এক মফস্বল এলাকায় একটা শিশুকে চা দোকান...